সামনেই মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা। সময় খুবই অল্প। মাত্র এক ঘন্টার পরীক্ষায় তোমার জীবনটাই পাল্টে যেতে পারে। তাই প্রস্তুতিটাও নিশ্চই সেভাবে হচ্ছে। হয়তো এখন তোমাদের রিভিশন পিরিয়ড চলছে। এসময় অনেকের মনেই ভয় কাজ করে। ভয়কে জয় করতে হবে আত্মবিশ্বাস দিয়ে। প্রস্তুতি ভালো হলে মনের ভয় দূর হয়ে যাবে। মনে রাখবে টেকনিক অবলম্বন করে পড়াশোনা করলে তোমার চান্স কেউ ঠেকাতে পারবে না। মেডকেলে ভর্তির প্রস্তুতি নিয়ে কিছু পরামর্শ দিচ্ছি নিশ্চই তোমাদের কাজে লাগবে :
সাধারণ জ্ঞান : প্রথমেই আলোচনা করা যাক সবচেয়ে সহজ বিষয় নিয়ে। সাধারণ জ্ঞানের পরিধি অনেক বিস্তৃত। তাই এর পেছনে খুব বেশি সময় দেওয়া ঠিক হবে না। তবে বিগত বছরের মেডিকেলের প্রশ্ন, BCS এর প্রশ্ন এবং সাধারণ জ্ঞানের ‘আজকের বিশ্ব’ বইটির বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়ের ‘বিবিধ’ অংশটুকু পড়লেই হবে।
ইংরেজি : সাধারণ জ্ঞানের মত ইংরেজি নিয়েও বেশি সময় নষ্ট করার প্রয়োজন নেই। গ্রামারের বিষয়ে সঠিক জ্ঞানের পাশাপাশি বিগত বছরের প্রশ্নগুলোর সমাধান করলেই যথেষ্ট হবে বলে মনে করি।
বায়োলজি : মনে রাখবে মেডিকেলে চান্স পাওয়ার পূর্বশর্তই হলো বায়োলজিতে ভালো করা। কারণ এটা নিয়েই মেডিকেলে পড়াশোনা করতে হবে বেশি। বেশিরভাগ প্রশ্নই প্রাণিবিজ্ঞান থেকে হয়। সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন থাকে ‘মানবদেহ’ অধ্যায় থেকে। তাই এই অধ্যায় ভালোভাবে রপ্ত করতে হবে। এছাড়াও কোষতন্ত্র, টিস্যুতন্ত্র ও রোগসংক্রান্ত যত বিষয় আছে তা ভালো করে পড়বে। উদ্ভিদবিজ্ঞানেও ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়া, সালোকসংশ্লেষণসহ রোগ ব্যাধি সংক্রান্ত সকল কিছু ভালো করে রপ্ত করতে হবে।
রসায়ন : রসায়নে মনোযোগের সঙ্গে চ্যাপ্টাগুলো পড়তে হবে। সকল প্রকার সূত্র, সূত্রের বিভিন্ন চলকের পারস্পরিক সম্পর্ক রপ্ত করতে হবে। এর পাশাপাশি ছোট কিন্তু টেকনিক্যাল অংকগুলো দেখে নেবে। গুরুত্বপূর্ণ চার্টগুলো রপ্ত করতে হবে। তবে সংখ্যাভিত্তিক সমস্যায় বেশি মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নেই।
পদার্থবিজ্ঞান : রসায়নের মত পদার্থবিজ্ঞানেও সকল প্রকার সূত্র, সূত্রের বিভিন্ন চলকের পারস্পরিক সম্পর্ক রপ্ত করতে হবে। এর পাশাপাশি টেকনিক্যাল অংকগুলো দেখে নেবে। গুরুত্বপূর্ণ চার্টগুলো রপ্ত করতে হবে। ছোট অংকের প্রতি বেশি গুরুত্ব দাও। সংখ্যাভিত্তিক সমস্যায় বেশি মাথা ঘামিও না।
এভাবে প্রস্তুতি নিতে নিতে তোমার পরীক্ষার সময় ঘনিয়ে আসবে। তাই মনোযোগের সঙ্গে প্রস্তুতি নাও। সময় নষ্ট করো না। মনে রাখবে পরীক্ষার আগের রাতে অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে। নয়তো পরীক্ষা খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
এবার চল জেনে নেই পরীক্ষার হলে তুমি কি করবে :
>>> পরীক্ষার হলে যাওয়ার আগে তুমি পরীক্ষার উপকরণ সঙ্গে নিয়েছ কিনা ভালো করে খেয়াল কর।
>>> দেরি না করে পরীক্ষার হলে অবশ্যই আগে আগে পৌঁছাবে। কেননা সিট খুঁজে না পাওয়া গেলে টেনশন কাজ করবে। এর সাথে পরীক্ষা হলে আগে পৌঁছলে পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার একটি বিষয় থাকে।
>>> মনে রাখবে রোল নম্বর ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর অবশ্যই ভালোভাবে পূরণ করতে হবে। তাড়াহুড়োর প্রয়োজন নেই। সতর্কতা অবলম্বন কর। মনে রাখবে ভালো পরীক্ষা দিলেই শুধু হবে না রোল নম্বর ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর ভুল হলে তোমার সব শেষ।
>>> মনে রাখবে OMR Sheet ভরাট করার সময় অবশ্যই সিরিয়াল ঠিক রাখার চেষ্টা করবে।
>>> প্রশ্ন পাওয়ার পর মাথা ঠান্ডা রেখে পুরো প্রশ্নটা একবার দ্রুত চোখ বুলিয়ে নাও। যেসব প্রশ্ন তুমি পারো তা সাথে সাথে দাগিয়ে নাও এবং প্রশ্নে কনফিউশন থাকলে পরের প্রশ্নে চলে যাও। এটা নিয়ে পরে মাথা ঘামাও।
>>> প্রশ্ন কঠিন মনে হলে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। মনে রাখবে প্রশ্ন কঠিন হয়েছে মানে সবার জন্যই কঠিন হয়েছে।
>>> অনেক সময় প্রশ্নের উত্তর নিয়ে কনফিউশন তৈরি হতে পারে। যেমন ধর, তুমি যদি মনে কর চারটি অপশনের মধ্যে ২টি অপশন ভুল, অন্য দু’টি ঠিক তাহলে প্রশ্নটি দাগিয়ে আসাটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
>>> পরীক্ষা চলাকালে ঘাবড়ে যাওয়া চলবে না। মাথা ঠাণ্ডা রেখে পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে।
No comments:
Post a Comment